বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম বলেছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বাংলাদেশি যাত্রীদের জন্য বিমান যোগাযোগ বাড়াতে আন্তর্জাতিক রুট সম্প্রসারণে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিউইয়র্ক, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, লস অ্যাঞ্জেলেস, রোম, মালে ও গুয়াংজুসহ বিশ্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি।’
ইউএনবির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বিমানের সিইও এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি পর্যায়ক্রমে এসব রুটে আমরা ফ্লাইট চালু করতে পারব। আমরা মূল্যায়ন করছি এবং কীভাবে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রতিটি রুটে ফ্লাইট শুরু করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি।
তারা আরও বলেন, এসব রুটে ফ্লাইট চালু হলে বাংলাদেশি যাত্রীদের জন্য বিমান যোগাযোগ সহজ হবে।
শফিউল আজিম বলেন, বিশ্বের ১৯টি গন্তব্যে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ড্রিমলাইনারসহ অত্যাধুনিক উড়োজাহাজসহ মোট ২১টি উড়োজাহাজ রয়েছে আমাদের। ইউরোপের অন্যতম কোম্পানির এয়ারবাস থেকে নতুন করে আরও ১০টি উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, এয়ারবাসে নতুন ১০টি উড়োজাহাজ যুক্ত হলে নতুন নতুন রুট সম্প্রসারণ সহজ হবে এবং এতে করে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে ফ্লাইট পরিচালনার নতুন দিক উম্মোচন হবে।
জনপ্রিয় রুটগুলোতে বিমানের ফ্লাইট বৃদ্ধি করলে টিকিটের দাম কমাতে অন্যান্য এয়ারলাইন্সগুলো বাধ্য হবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু এশিয়া নয় পশ্চিমা দেশ, বিশেষ করে ইউরোপেও আমাদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সম্প্রসারণের কাজ হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্কে সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টি রয়েছে। আমরা দ্রুত চালু করতে চাই সেজন্য বিমান বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তার সব কিছু এরই মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে আমরা নিউইয়র্কেও সরাসরি যেতে পারব। এক্ষেত্রে দেশগুলোর এয়ারলাইন্সের সঙ্গে আমাদের কোড শেয়ারিংসহ বিভিন্নভাবে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
শফিউল আজিম এ বিষয়ে আরও বলেন, আমাদের সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটি এবং তাদের ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টের কিছু আনুষ্ঠানিক কাজ চলমান। সবকিছু ঠিক থাকলে এই বছরের শেষের দিকে নিউইয়র্কসহ নতুন রুটে ফ্লাইটের কার্যক্রমগুলো সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-নারিতা রুটে ১ সেপ্টেম্বর ফ্লাইট চালু করবে বিমান
তিনি বলেন, বিমান বাংলাদেশ সম্প্রতি গালফ এয়ারের সঙ্গে পার্টনারশিপে কাজ শুরু করেছে। গালফ এয়ার বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন পর্যন্ত আমাদের ফ্লাইট নেয়। কিন্তু গালফ এয়ার আমাদের যাত্রীদের নিয়ে যাবে বিমানের টিকিটে। আবার বাংলাদেশ থেকে যদি কেউ ইউরোপে যেতে চায় সেক্ষেত্রে গালফ এয়ার বাহরাইন হয়ে ইউরোপে চলে যাবে। আমার বিমান যেহেতু ইউরোপে যাচ্ছে না তাই আমার থেকে টিকিট কেটে এই সুবিধা নিয়ে ইউরোপে চলে যেতে পারবে। একইভাবে ইউরোপ থেকে যদি কেউ বাংলাদেশে আসতে চায় গালফ এয়ার তাদের নিয়ে আসতে পারবে। যেহেতু বাংলাদেশ বিমানের ইউরোপে যাওয়ার সুযোগ নেই তাই মুনাফাটা ভাগাভাগি হবে।
তিনি আরও বলেন, বিমানের যাত্রীসেবার মান কীভাবে বাড়ানো যেতে পারে সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। কেউ যদি অপরাধ করে, সে বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।
বিমান সার্ভিসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিমান আগে থেকে ভালো সার্ভিস দিচ্ছে। বিমানে ভ্রমণে এখন বাংলাদেশিসহ সব যাত্রীর পছন্দনীয় এয়ারলাইন্স হয়েছে। তাই বিমান সার্ভিসকে আরও উন্নত করতে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর জাপানের নারিতায় ফ্লাইট চালু হচ্ছে জানিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, চেন্নাই আমাদের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে। এ ছাড়া চায়নার গুয়াংজুর বন্ধ ফ্লাইটটি আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি আমরা নতুন করে চালু করতে যাচ্ছি। পাশাপশি জাপানের নারিতা হয়ে অন্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন এবং কোড শেয়ারিংয়ের চেষ্টা করছি।
জাপানে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, এটাকে বাংলাদেশ বিমানের বড় একটি অর্জন বলতে চাই। এক সময় এই রুটে ফ্লাইট চলাচল থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা থেকে পূর্ব দিকে ফ্লাইট নেটওয়ার্ক কম ছিল। এটার মধ্যদিয়ে আমাদের নতুন দিগন্ত চালু হলো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-জাপান পর্যটন বাড়াতে হবে। এজন্য বিমানের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে। একইসঙ্গে প্রতিবেশি দেশগুলো থেকে যাত্রীরা যেন ঢাকা হয়ে জাপান যাওয়া-আসা করতে পারেন সে বিষয়ে আমরা বিপণন কৌশলে এগোচ্ছি।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: বিমান সিইও